শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:৫৩

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

বরগুনার এক বাড়িতেই থাকে ২৬ ভিক্ষুক!

dynamic-sidebar

অনলাইন ডেস্ক::: বরগুনার বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের খোলপটুয়া গ্রামের লওয়াই বাড়ি। ভিক্ষুক বাড়ি নামেই এই বাড়ির পরিচিতি। মরহুম আঃ লতিফ ওরফে লওয়াই এর না অনুসারে এই বাড়িটি স্থানীয়দের কাছে লওয়াই বাড়ি নামেই পরিচিত। এই বাড়িতে মোট ১৪টি পরিবারের বসবাস। প্রতিটি পরিবারেই কেউ না কেউ পেশা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তিকেই বেছে নিয়েছেন। তবে এই বাড়িতে পুরুষ ভিক্ষুককের চেয়ে নারী ভিক্ষুকই বেশি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিশ্বাস না মনে হলেও এটাই সত্যি এক বাড়িতেই ২৬ জন ভিক্ষুকের বসবাস। সব মিলিয়ে বাড়িতে ২৬ জন ভিক্ষুকের বসবাস।

সরেজমিনে আরো দেখাগেছে, এই বাড়িতে মাতৃস্নেহ ছাড়াই বেড়ে উঠছে বাড়ির ছোট ছোট শিশুরা এবং বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার সুযোগ থেকে। লওয়াই বাড়ির ভিক্ষুক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় প্রভাব পড়ছে তাদের উপার্জনে। একজন সাধারণ ভিক্ষুকের থেকে তাদের উপার্জন অনেক কম এবং ক্রমশ দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে তাদের জীবনযাত্রার ব্যায়ভার বহন।

খোলপটুয়া গ্রামের লওয়াই বাড়ির ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় থাকা আঃ গনি লওয়াই বলেন, মোর বাপে হেই কোলে থাহা অবস্থায় মরছে। মায় তিন ভাই বোনরে কি খাওয়াইয়া মানু হরবে। হের লইগ্যা মায় ছোট থেকেই মোরে কোলে কোলে লইয়া ভিক্ষা হরছে। হ্যার পর মায়ও মরছে। এহন মুই কি খামু। হের লইগ্যা মুইও ছোডকাল থেইক্যা ভিক্ষা হরি। মোর একটা পা দিয়া হাটতেও পারি না। মোগো বাড়ির ভিক্ষুদের কেউ ভালো চোহে দ্যাহে না। বয়স্ক ভাতা ছারা মোরা কিছুই পাইনা।

শুধু গনিই লওয়াই নয় মোশ্বেদা, তাজেনুর, কুলসুম, ফাতেমা, হনুফা, ছকিনা, মালেকা, রিজিয়া, খোদেজা, ময়না, হালিমা, খোকন, রাবেয়া, রেখাসহ এ বাড়ির সকলের একটাই অভিযোগ কেউ তাদের খোজ রাখে না। কোন সাহায্য সহযোগিতা দূরে থাক তারা যাতে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে এই ভিক্ষাবৃত্তি পেশা ছারতে পারে এই পরামর্শ টুকুও কেউ কোন দিন তাদের দেয়নি। তারাও চায় সমাজের অন্য সকলের মতো কাজ করতে। ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে।

বিভিন্ন সময় বামনার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বামনাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও তার ছোয়া এসে পৌঁছায়নি এই বাড়িতে। সক্ষম নারী ভিক্ষুকদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে যে তারা শুধু মাত্র কর্মসংস্থানের অভাবেই ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নিয়েছে। তারাও চায় সম্মানজনক পেশায় যুক্ত হতে। মুছে ফেলতে চায় তাদের ভিক্ষুকের পরিচয়। তারাও স্বপ্ন দেখে তাদের সন্তানেরা বেড়ে উঠবে অন্য সব সাধারণ শিশুদের মত।

বামনা উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে মোট ২৪১ জন ভিক্ষুক রয়েছে। এর মধ্যে বুকাবুনিয়া ইউনিয়নে ৬৮ জন, বামনা সদর ইউনিয়নে ৪৮ জন, রামনা ইউনিয়নে ৫৭ জন ও ডৌয়াতলা ইউনিয়নে রয়েছে ৬৮ জন ভিক্ষুক।

একই বাড়িতে ২৬ জন ভিক্ষুকের বিষয়ে রামনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আ. খালেক জমাদ্দার বলেন, এদের পেশাই ভিক্ষাবৃত্তি। এদের কোন কাজ দিলেও এরা করে না। আমি বহুবার তাদের কর্মমূখী করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু এরা কাজ করতে আগ্রহী নয়।

বামনা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মিজান সালাহ উদ্দিন বলেন, সারাদেশে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ বর্তমান সরকার হাতে নিয়েছে। আমরা এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। সে অনুসারে আমাদের তালিকাও করা হয়েগেছে। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিলে আমরা এ উপজেলার ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো।

বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি বলেন, এটা আসলেই অবিশস্য বিষয়। একবাড়ীতে ২৬ জনই ভিক্ষাবৃত্তি পেশার এই প্রথম শুনলাম। তবে তাদের পুনর্বাসন ও আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। -কালের কণ্ঠ

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net